কৃষি মন্ত্রণালয় দেশের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের খরিফ ২০১৬-১৭ মৌসুমে উফশী ও নেরিকা আউশ আবাদ বৃদ্ধির প্রণোদনা (বিনামূল্যে বীজ, রাসায়নিক সার এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান) ও কুমড়াজাতীয় সবজির মাছি পোকা দমনে সেক্স ফেরোমন ট্র্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি, মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য ধৈঞ্চা চাষের জন্য প্রণোদনা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। গত ২৭ মার্চ সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলন মাননীয় কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এমপি এ প্রণোদনা কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
মাননীয় মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল ও বরেন্দ্র এলাকার ‘জেলাসমূহ যেখানে সেচের ব্যবস্থা নেই এবং দেশের দক্ষিণাঞ্চলের আউশ নির্ভর জেলাসমূহে আউশের বিভিন্ন জাত জনপ্রিয়করণের লক্ষ্যে এ প্রণোদনা কর্মসূচি প্রস্তাব করা হয়েছে। গৃহীত প্রণোদনা কর্মসূচির অন্যতম উদ্দেশ্য হলো, আউশ আবাদে কৃষকদের উৎসাহিতকরণ, আবাদের এলাকা বৃদ্ধিকরণ, উফশী জাতের সম্প্রসারণ, ফসলসমূহের হেক্টরপ্রতি ফলন বৃদ্ধি, সার্বিকভাবে ধান ফসলের মোট উৎপাদন বৃদ্ধিকরণ।
মাননীয় মন্ত্রী বলেন, প্রণোদনা মোট মঞ্জুরিকৃত অর্থ ৩৩ কোটি ৬২ হাজার ২৩৫ টাকা যা ২ লাখ ৩১ হাজার ৩৬৩ বিঘা জমির জন্য প্রয়োজনীয় বীজ ও রাসায়নিক সার বিনামূল্যে সরবরাহ করা হবে। এ প্রণোদনার সুবিধা পাবেন ২ লাখ ৩৩ হাজার ৩৬৩ জন কৃষক। প্রণোদনার জন্য বিঘাপ্রতি কৃষি উপকরণ সহায়তার পরিমাণ প্রতি কৃষক ১ বিঘা জমির জন্য ৫ কেজি করে উফশী আউশ ধানের বীজ, ২০ কেজি ইউরিয়া, ১০ কেজি ডিএপি এবং ১০ কেজি এমওপি সার, সেচ বাবদ ৪০০ টাকা পাবেন। এছাড়া ১ বিঘা জমির জন্য প্রতি কৃষক পাবেন ১০ কেজি নেরিকা আউশ ধানের বীজ, ২০ কেজি ইউরিয়া, ১০ কেজি ডিএপি এবং ১০ কেজি এমওপি সার আর সেচ বাবদ ৪০০ টাকা এবং আগাছা দমন বাবদ ৪০০ টাকা পাবেন।
উক্ত প্রণোদনা কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে ৭০৫৭৮.৪৬ মেট্রিক টন উফশী আউশ উৎপাদন হবে এবং ১০০৩৩.৫০ মেট্রিক টন নেরিকা আউশ উৎপাদন হবে বলে ধারণা করা যায়।
মাননীয় মন্ত্রী আরও বলেন, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের কুমড়াজাতীয় সবজির মাছি পোকা দমনের সেক্স ফেরোমন ট্র্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধির প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ২,৮৮৫ জন চাষিকে ৮৯ লাখ ৪৩ হাজার ৯৩৩ টাকা ব্যয়ে বিপুল পরিমাণ পট ও লিওর প্রদান করা হবে। এ ক্ষেত্রে দেশের ৬৪ জেলায় কুমড়া উৎপাদনকারী উপজেলাসমূহের ২,৮৮৫টি প্লটের প্রদর্শনী বাস্তবায়িত হবে।
ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের ২০১৬-১৭ মৌসুমে মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য ধৈঞ্চা চাষের জন্য ৫০০০ চাষিকে ১ কোটি ৭ লাখ ৭৫০ টাকা ব্যয়ে ধৈঞ্চা ফসলের বীজ প্রদান করা হবে। এছাড়া মোট ৫০০০টি ধৈঞ্চা চাষের প্রদর্শনী প্লট প্রদর্শন বাস্তবায়ন করা হবে।
খরিফ-১/২০১৬-১৭ মৌসুমে উফশী আউশ, নেরিকা আউশ এবং ধৈঞ্চা ও কুমড়া জাতীয় সবজি চাষ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রণোদনা কর্মসূচি সর্বমোট (২৭২১.৬২১৫৭+৫৭৯.০০+১৯৬.৪৪৬৮৩) = ৩৪৯৭.০৬৮৪ লাখ (চৌত্রিশ কোটি সাতানব্বই লাখ ছয়শ’ চুরাশি) টাকা প্রণোদনা মঞ্জুরি প্রদান করা হলো।
প্রস্তাবিত ও প্রণোদনা কর্মসূচিতে মঞ্জুরীকৃত অর্থ কৃষি মন্ত্রণালয়ের বাজেট বরাদ্দ হতে সংকুলান করা হবে এবং এর জন্য কোনো অতিরিক্ত বরাদ্দের প্রয়োজন হবে না।